الباسط
كلمة (الباسط) في اللغة اسم فاعل من البسط، وهو النشر والمدّ، وهو...
হাসান ইবন আলী —রাদিয়াল্লাহু আনহুমা— থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে কিছু বাক্য শেখান যেগুলো আমি বিতিরের সালাত বলি। ইবনু জাউওয়াস বলেন, বিতিরের সালাতের কুনূতে। “হে আল্লাহ্! যাদের তুমি হিদায়াত দিয়োছ তাদের সাথে আমাকেও হিদায়াত দান করো, যাদের তুমি নিরাপত্তা দান করেছো তাদের সাথে আমাকেও নিরাপত্তা দান করো। যাদের তুমি অভিভাবকত্ব গ্রহণ করেছো, তাদের সাথে আমারও অভিভাবকত্ব গ্রহণ করো, তুমি আমাকে যা দান করেছো তাতে বরকত দাও। তোমার নির্ধারিত অকল্যাণ থেকে আমাকে রক্ষা করো। কেবল তুমিই ফায়সালা দিতে পারো, তোমার উপর কারো ফায়সালা চলে না। তুমি যার পৃষ্ঠপোষকতা দাও, সে কখনও অপমানিত হয় না। আর তুমি যাকে দুশমণি রাখো তাকে কেউ ইজ্জত দিতে পারে না। হে আমাদের রব! তুমি পবিত্র, কল্যাণময় ও সুউচ্চ”। অপর বর্ণনায় এসেছে, শেষে তিনি বলেন, নবী মুহাম্মাদের ওপর আল্লাহ তা‘আলা রহমত রাযিল করুন।
এ হাদীস শরীফটি কতক মূল্যবান বাক্যকে সামিল করে যেগুলো একজন মুসলিম বিতিরের সালাতের জন্য দাড়ানো অবস্থায় বলবে। তার কথা: “আমি তা বলব” অর্থাৎ আমি তার দ্বারা দো‘আ করব। আর তার বাণী “বিতিরের কুনূতে” অপর বর্ণনায় “বিতিরে” এসেছে। কুনূত কয়েকটি অর্থে ব্যবহার হয়। আর এখানে কুনুত দ্বারা উদ্দেশ্য হলো দাঁড়ানোর বিশেষস্থানে দো‘আ করা। “হে আল্লাহ্! আমাকেও হিদায়াত দান করো”। অর্থাৎ হিদায়াতের ওপর অটল ও অবিচল রাখো। অথবা আমার জন্য তুমি হিদায়াতের কারণসমূহ বাড়িয়ে দাও। “যাদের তুমি হিদায়াত দিয়োছ তাদের সাথে”। সামগ্রিকভাবে তুমি যাদের হিদায়াত দিয়েছ অথবা নবী ও অলীদের থেকে যাদের তুমি হিদায়াত দিয়েছো। যেমন নবী সুলাইমান বলেছেন : “আর তোমার অনুগ্রহে আমাকে তোমার নেক-বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত কর”। আর তার বাণী: “আমাকে নিরাপত্তা দিন” শব্দটি মু‘আফাত থেকে। যার অর্থ হলো মন্দ প্রতিহত করা। আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী “আমার অভিভাবকত্ব গ্রহণ করো”। আমার যাবতীয় বিষয়ের এবং তা সংশোধন কর। “যাদের যাবতীয় বিষয়ের তুমি অভিভাবকত্ব গ্রহণ করেছো, তাদের সাথে”। তুমি আমাকে আমার নিজের দিকে সপর্দ করো না। আর মাজহার বলেছেন: ‘তাওয়াল্লানি’ ক্রিয়াটি ‘তাওয়াল্লা’ শব্দ থেকে অনুরোধসূচক ক্রিয়া (সিগা)। যখন কেউ কোনো গোলামকে মহব্বত করে এবং তার সংরক্ষণ ও তার যাবর্তীয় কর্মের দায়িত্ব গ্রহণ তখন তাওয়াল্লা বলা হয়। “আর তুমি বরকত দাও” অর্থাৎ কল্যাণ বৃদ্ধি করো, আমার জন্য অর্থাৎ আমার উপকারের জন্য। “আমাকে যা দান করেছো তাতে”। অর্থাৎ, আমাকে, মাল, হায়াত, জ্ঞান ও আমল যা তুমি দান করেছো। আর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী : “আমাকে রক্ষা করুন” অর্থাৎ আমাকে হিফাজত করুন। তোমার নির্ধারিত অকল্যাণ যা তুমি ফয়সালা করেছো অর্থাৎ আমার জন্য নির্ধারণ করেছো অথবা তোমার সিদ্ধান্তের খারাপি থেকে আমাকে রক্ষা করো। বলা হয়েছে: আল্লাহ বান্দার জন্যে তার দুঃজনক যে ফয়সালা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন তার থেকে নিরাপত্তা ও সুরক্ষার প্রার্থনা করা হয়েছে। এটা হচ্ছে বাহ্যিক আসবাব ও কারণসমূহের বিবেচনায় যার সাথে ঘটনাগুলো সংঘটিত হয়। আর এতে সর্বদাই রহিতকরণ ও প্রতিস্থাপন হতে থাকে। কেবল তুমিই যা ইচ্ছা করো তা নির্ধারণ ও ফায়সালা দিতে পারো, তোমার উপর কারো ফায়সালা চলে না। অর্থাৎ, কারো হুকুম তোমার ওপর আরোপিত হয় না। তোমার হুকুমের কোন পরিবর্তনকারী নেই। তুমি তোমার ওয়াদার দাবি অনুযায়ী তোমার নিজের ওপর যা ওয়াজিব করেছো তা ছাড়া আর কোন কিছুই তোমার ওপর ওয়াজিব নয়। অবশ্যই প্রকৃত অবস্থা হচ্ছে, তুমি যার পৃষ্ঠপোষকতা দাও, সে কখনও অপমানিত হয় না। মুয়ালাত শব্দ মুআদাত শব্দের বিপরীত। এ কথাটি ‘যাকে তুমি দুশমণি রাখো তাকে কেউ ইজ্জত দিতে পারে না—এর বিপরীতে। যেমনটি কোন কোন বর্ণনায় এসেছে। অর্থাৎ তোমার বান্দা থেকে যার তুমি অভিভাবক হবে সে আখিরাতে অপমান হবে না অথবা কখনোই অপমান হবে না, যদিও সে এমন পরীক্ষায় পড়ে যার দ্বারা তাকে পরীক্ষা করা হচ্ছে। এবং তার ওপর এমন ব্যক্তিকে প্রভাব বিস্তার করতে দেওয়া হয় যে তাকে বাহ্যিকভাবে অপমান ও লাঞ্ছিত করে, কারণ আল্লাহ এবং তার অলীদের নিকট এটি হলো সবোর্চ্চ মর্যাদা ও সম্মান। আর তাদের মূল্যায়ণ ব্যতিরেকে কারো মূল্যায়ণ গ্রহণযোগ্য নয়। এ কারণেই নবীগণের ওপর বিভিন্ন আশ্চর্য রকমের পরীক্ষাসমূহ আরোপিত হয়েছে যা আমাদের নিকট প্রসিদ্ধ। তার বাণী: —তুমি বরকতময়’ দ্বারা হাদীসটি শেষ করা হয়। অর্থাৎ দুনিয়া ও আখিরাতে তোমার কল্যাণ অসংখ্য। “হে আমাদের রব!) তুমি সুউচ্চ, অর্থাৎ তোমার আজমত অনেক উঁচা। আর তোমার কুদরাত ও ক্ষমতা দুনিয়া ও আখিরাতে যারা আছে তাদের সবার ওপর স্পষ্ট। এবং তুমি সকল বস্তুর সাদৃশ্য থেকে উর্ধ্বে।